ধর্ম ডেস্ক
বিশ্ব ইজতেমা, ছবি : মারুফ হাসান আবির
শূরায়ে নেজামের অধীনে পরিচালিত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের দ্বিতীয় দিনে বাদ মাগরিব আম বয়ান করেছেন মাওলানা ইবরাহিম দেওলা। অনুবাদ করেছেন মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়ের আহমাদ।
বয়ানে মাওলানা ইবরাহিম দেওলা বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা ঈমানদারদের সামনে আলোচনা করতে বলেছেন, কারণ, আলোচনা মুমিনদের উপকারে আসবে। তাই আমাদের উচিত দ্বীনের কথা আলোচনা করা এবং নিজের প্রয়োজন মনে করে শোনা। আমরা যারা এখানে এসেছি তাদের উচিত দ্বীনের আলোচনা শুনে দ্বীনের তাকাজা নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া।
তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালার কাছে সব থেকে বুদ্ধিমান হলো সেই ব্যক্তি যে বুঝতে পারে যে দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী এবং এটা বুঝতে পেরে পরকালের জন্য প্রস্তুতি নেয়। মানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে আল্লাহর সামনে খালি হাতে উপস্থিত হবে। তখন কঠিন পরিস্থিতি দেখে মানুষ আবারো পৃথিবীতে ফিরে আমল করতে চাইবে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা আর সেই সুযোগ দেবেন না। এজন্য প্রত্যেকের উচিত চিন্তা-ভাবনা করা সে পরকালের জন্য কি উপার্জন করছে তা চিন্তা করা এবং আখেরাতের প্রস্তুতি নেওয়া।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ যেমন কাটলো
তিনি বলেন, অন্তরে আল্লাহ তায়ালার ভয় তৈরি করতে হবে। নিজের ঈমান বৃদ্ধি করতে হবে। অনেকেই এমন আছেন যারা প্রতিনিয়ত দুনিয়াবী কাজে ব্যস্ত। কিন্তু আখেরাতের কথা ভাবার কোনো সময় হয় না তাদের। দ্বীন ও আখেরাত শেখার জন্য তাদের উচিত আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া। আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে ঈমান, ঈমানের ফজিলত শেখা। আর কেউ যদি দ্বীনের কথা না ভেবে দুনিয়ার পেছনে পড়ে থাকে, তাহলে দ্বীনের কোনো কাজ হবে না। একদিন হায়াত ফুরিয়ে যাবে, দুনিয়ার ধন-সম্পদ সব পড়ে থাকবে, কিন্তু শূন্য হাতেই আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হতে হব
বয়ানে তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, আমরা পৃথিবীতে শুধু আয়-রোজকার, ইনকামের জন্য আসিনি। বরং আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দ্বীন ও তার কিতাবের উত্তরসূরী বানিয়েছেন। আল্লাহর কিতাব পেয়েও অনেকে কিতাব অনুযায়ী জীবনযাপন করে না। যারা আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী জীবনযাপন করে না, তারা জালেম।
আবার আরেক শ্রেণীর মানুষ আল্লাহর কিতাবের কিছু অংশ পালন করে আবার কিছু অমান্য করে। আরেক শ্রেণীর মানুষ আল্লাহর কিতাবের সব বিধান পালন করে। এই শ্রেণীর মানুষেরা সর্বশ্রেষ্ঠ। এই শ্রেণীর মানুষদেরকে আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন এবং জান্নাত দান করবেন।
তিনি বলেন, যারা আল্লাহর দ্বীনের কাজ করতে চায় শয়তান বিভিন্ন বাহানায় তাদেরকে দ্বীনের পথ থেকে বিচ্যুত করার চেষ্টা করে। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, শয়তানের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। কারণ কেউ বাহানা তৈরি করে দ্বীনের কাজ থেকে দূরে সরে থাকলে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য বিচ্যুতির পথ সহজ করবেন এবং দ্বীনের পথ কঠিন করবেন। এজন্য দ্বীনের কাজে বাহানা বানানো যাবে না।
তিনি বলেন, মানুষের প্রয়োজন এবং সমস্যা থাকে, কিন্তু বাহানাকে সমস্যা ও প্রয়োজন বানানো যাবে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যেই নেয়ামত দান করেছেন তা ভালো লাগে, কিন্তু যেই দায়িত্ব দিয়েছেন তা পূরণ ভালো লাগে না— এমন হওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা মানুষকে ঈমানদার হতে বলেছেন এবং সত্যবাদী হতে বলেছেন। যারা সত্যবাদী থাকবে তারা কিয়ামতের দিন এর ফলাফল ভোগ করবে। বাহানা না করে এই মেহনতের সঙ্গে থাকতে হবে। এবং আমল করতে হবে।
মাওলানা ইবরাহিম দেওলা বলেন, দ্বীনের কাজ করতে গিয়ে জাহালাত থেকে বাঁচতে হবে। আল্লাহ তায়ালা যেই কোরআনের ইলম দিয়েছেন তা শিখতে হবে এবং আল্লাহর জিকির করতে হবে। যে তা করবে না সে জালেম এবং আল্লাহর হুকুম অমান্যকারী।
হাবিবুর রহমান সুজন কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত